কভার কাহিনী ৪

"একাকিত্বের অভিশাপ"

সুশান্ত সিং যেদিন আত্মঘাতী হল সেদিন মনটা ভীষণ ভার ছিল অনিতার, সবার মতো কি   না জানি না, তবে ও একটু বেশিই ভেঙে পড়েছিল, মনে পড়ে যাচ্ছিল ডিপ্রেশনে থাকা কালীন তার জীবন যুদ্ধের কথা গুলো। না, কিছু কথা বলা হয় না, রয়ে যায় অধরা। বাচিক শিল্পী রুপে সেদিনও অনুরোধ আসছিল তার কাছে  সদ্য যোগ দেওয়া একটা ইউটিউব চ্যানেলের গ্রুপ থেকে। কিন্তু আজ যে বাধ ভাঙা অশ্রু নেমেছে তার দুচোখ দিয়ে, জীবনের চলার পথ যে সোজা নয়, প্রতিটি পদক্ষেপে সমালোচিত হতে হয়, লাঞ্ছিত হতে হয়, সবই জানে সে, কিন্তু বার বার মনে হতে থাকে লড়াইটা শেষ করি এবার, আরও একটা সুশান্ত সিং এর গল্প তৈরী হোক না, অসুবিধা কোথায়? ভাবল অনিতা। জীবন টাকে উপন্যাস কেন হতে হবে, ছোটগল্প ই থাক না। হয়তো সেদিন আরও কিছু ঘটত, কিন্তু তখনই মুঠো ফোনটা বাজল, ফোন টা ধরেই শুনল একটা স্বর , না পরিচিত নয়। ক্ষণিকের জন্য সব ভুলে গিয়ে  কল্ টা রিসিভ্ করার পর, দেখল শান্তনু দা বলছে ,'ওপার থেকে কিরে চিনতে পারলি না তো? ' ' আমি জানতাম তোর মন খারাপ।অনিতা এখন রোজ রাতে একাই থাকে,লেখালিখির শখ তাই বাড়ির কেউ এই নিয়ে কিছু বলে না। কিন্তু ওরা বোধ হয় জানতেও পারে না, একাকিত্ব আর অবসাদে ঘেরা একলা রাত গুলোর কথা। আজ হয়ত সব শেষ হতো, শান্তনু দা ফোন না করলে। শান্তনু দার সাথে পরিচয় ওই লেখালিখি, আবৃত্তি এর মাধ্যমেই, তবে সেদিন যেন মানুষটা কিছু আন্দাজ করেছিল, সবার অজান্তেই তার এই অবসাদ গ্রস্ত মন আর মেকি হাসি দিয়ে ঘেরা একটা মানুষ এর বাইরে একাকিত্ব আর বিষাদে ভরা জীবনের সন্ধান পেয়েছিল, জানিনা কিভাবে। সেদিন মানুষটার কাছে একটা শিক্ষা মিলেছিল, না আত্মঘাতী দ্বারা জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়া যায় না, এটা সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ নয়, লড়াই করে, সব অবসাদকে দূরে ঠেলে আমাদের বাঁচতে হয়। সেদিন নিজেকে নতুন ভাবে চিনেছিল অনিতা, আজ বুঝেছিল জীবনটা সিনেমা নয়, নয় কোনো সস্তা পুতুল খেলা।

সুমন ঘোষ

Comments

Popular posts from this blog

অপরাজিত -৯

অপরাজিত ১০

অপরাজিত ৮