চন্দ্রমুখী দর্শন ১



((সবার উপরে মানুষ সত্য,,,,,
তাহার উপর কেউ নেই,,,,,,,
মনুষ্যত্ব বুদ্ধিজীবী হবার চরম সার্থকতা,,,,,
নাহলে বুদ্ধিমত্তা কোন পিশাচের দেহে কূটকৌশল ও চালাকি তে পরিণত হয়,,,,,
যার দ্বারা জনহিতে কোন কাজ হতে পারে না,,,, সে জ্ঞান‌ও তখন আত্মঅহং বোধে চরম অনিষ্টকর হয়ে যায়,,,,,,,))

একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিস্বত্তা যে পেয়েছে অনেক সম্মাননা সনদ ও বিভিন্ন পুরষ্কার,,,,, অনেকখানি তাবড় ব্যক্তিত্ব যার যথেষ্ট সুনাম আছে এই সাহিত্য জগতে যে উঠতি লেখক তার প্রাপ্তির সামনে নিজেকে অনেকটাই হীনম্মন্যতায় নিজেকে ভোগায়,,,,,এইসব ঘটনা তাকে অনেকটাই প্ররোচিত করে অহংবোধে ভুগতে আর অন্য সমসাময়িক লেখককে ছোট করে দেখতে,,,, যেটা হল একপ্রকার পাপ,,,,,
শুধু কী তাই তার মাটিতে পা পড়ে না সে অতি সহজে বা অবলীলায় কোন সম্পাদক কে যা হোক বলে দিতে পারে যাতে তার প্রতিষ্ঠিত সম্মানে আঘাত হানে কিংবা তার আত্মপ্রত্যয় কে টলিয়ে দিতে পারে এতোটাই তার স্পর্ধা,,,,


তার কবিতাগুচ্ছ যেগুলো একবার প্রকাশিত হয়ে গেছে কোন সম্পাদকের এক পত্রিকায় তার পরেও হয়ত ইচ্ছাবশতঃ তার ব্যক্তিগত আক্রোশ ঐ সম্পাদকের উপর মেটাতে অন্য কোন পত্রিকায় ছাপতে দিয়ে দেয় সেই এক প্রকাশিত লেখা,,,,, যখন সেটা সেই সম্পাদকের চোখে পড়ে তখন তার নিজেকে বড় ছোট লাগে আর তার পত্রিকার বিষয়বস্তু লিক হবার আশঙ্কায় প্রমাদ গোনে আর ভাবে যে তার কাজের কোন নিশ্চয়তাই আর থাকলো না,,,, যেটা একটা রীতিমতন ক্রাইম,,,, হা হয়ত অগোচরে বা খেয়াল না থাকলে ভুলবশত এই কাজ হয়ত সেই লেখক করতেই পারে কিন্তু এটা তার ইচ্ছাকৃত ঘটানো তার প্রমাণ সেই সম্পাদক এর অনেক আগেই পেয়েছে,,,,,

সম্পাদকের প্রকাশিত এক কাব্যগ্রন্থে তার গুচ্ছকবিতা প্রকাশিত হয়েছিল,,,, কিন্তু সেই সম্পাদক পরে তার প্রাপ্য সৌজন্য কপি পাঠালে সে খুশী হয় না বরং সেই সম্পাদক কে ম্যাসেঞ্জারে ব্যক্তিগত ভাবে আক্রমণ
 করে,,,, সম্পাদক তাকে বলে খুব আন্তরিকতার সাথে ভালোবেসে যে আপনি অবশ্য‌ই এই কাব্যগ্রন্থের সমালোচনা করবেন দিয়ে পোস্ট দেবেন,,,, তাতে সে বিরুদ্ধাচরণ করে বলে ওঠে না সেসব আমার দ্বারা হবে না,,, ঐ কাজটা বরং আপনি নিজে নিজেই করে নিন,,,,
তাতে সম্পাদক নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলে আর শূন্যতা বোধ করে সাথে অপমানিত যে তার কথার কোন দাম নেই,,,,যেন সেই লেখকের পায়ের তলায় মাড়িয়ে যাওয়া কোন জুতোর ধুলো,,,,যেন কোন কাঙাল ভিখারী যার ক্ষুধার্ত জঠরে ঐ কলমের ভাত ক্ষিধে লুকিয়ে আছে যাকে হন্যে হয়ে খুঁজে সে হয়ে গেছে কায়দা মারা লালা ঝরানো জিভে কোন রাস্তার পাশে পড়ে থাকা কুকুর,,,,তাকে প্রচন্ড হীনম্মন্যতায় ভোগানো হয়,,,,
সে ভেবে কোন কুলকিনারা পায় না কী তার অপরাধ‌ আর কেন তার এই অসমাপ্ত শোক অশৌচ,,,,

পরে এক স্বনামধন্য প্রকাশনী সেই সম্পাদক কে কবিতা পাঠের জন্য আমন্ত্রণ জানালে আর উচ্চ ব্যক্তি দের মাঝে উপস্থিত থাকতে বললে তার সম্মান দশগুণ বেড়ে যায়,,,,,
অনেকদিন পর তার পরিচিতি প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে বলে তার আর আনন্দ ধরে না,,,,,,
ঐ পূর্ব পরিচিত প্রতিষ্ঠিত ময়াল সাপ ব্যক্তি অনেক আগেই সেখানে উপস্থিত ছিল,,,,,
সে ঐ সম্পাদক কে যাকে সে একদিন ছোট করেছিল দেখে অবাক হয়ে যায়,,, ভাবে এখানে সে এল কী করে,,,,,
পরে অনেক নিজেকে সামলিয়ে সম্পাদকের সাথে কথা বলতে তাকে ডেকে নিয়ে নিজের পাশে কথা বলতে থাকে তার সাথে,,,,,
মনে মনে ভাবে এ এই নগণ্য ছাপোষা মধ্যবিত্ত ব্যক্তি এখানে কী করে এলো হয়তো এর মধ্যে নিশ্চয়ই কোন যোগ্যতা আছে যা আজ স্বীকৃতি পাচ্ছে চলো তাহলে বিষ নেই আমার কুলোপনা চক্র তো আছে সেটা নাচিয়ে একটু কথা বেচে কায়দায় নৃত্য শৈলীর অহংবোধের নিক্বণে প্রেয়সীর সোহাগে তোমাতে ঢলে পড়ি লোক দেখাতে তাতে ক্ষতি কী,,,, ক্ষণিকের জন্য তো সেটা তো আর চিরস্থায়ী নয়,,,

তখন যেন কোনভাবে দৈবী আদেশ প্রতিধ্বনিত হল হুংকারে গর্জনে মেঘে ঢাকা তারা আমি কোন,,, ওরে মুর্খ ওরে প্রস্ফুটিত রক্ত কুসুম ঝরা পাতার মৃত্যু শোকে তুই ও একদিন ঢলে পড়ার শ্যাম তুঁহু মরণ ভ্রমে তান কী হবে,,,, তুই তো আদতে কলমের ক্রীতদাস সেটা কী গেছিস ভুলে,,,,,

সম্পাদক অতি মাটির মানুষ একেবারে গলে যায় তার একটু ভালোবাসার ডাকে আর নিজের আত্মগ্লানি তার সামনে বোকা পায়রার মতন ডানা ঝাপটিয়ে নতুন উচ্ছ্বাস ও মুক্তিমোহে মগ্নচৈতন্যে পাঁজরভাঙা বিষাদের অন্তর্যন্ত্রণা উগরাতে থাকে,,,,
অবাক কান্ড সেই লেখক আবার সম্পাদক কেই অপমান করে আর তাকে ছোট করে তার ভুল ধরতে থাকে,,,, আপনি এই আপনি ঐ আপনি সাত খুন করে এসে মাফ চাইছেন তাও আবার আমার কাছে আপনার কী যোগ্যতা আছে ঐ পিঁপড়ের মতন যে সঞ্চয়ের শোকে কালরাত্রি যাপন করে সংসারের চোরাকুঠুরিতে,,,, আর জানেন তো মশাই ঐ কথায় আছে না পিপীলিকার ডানা গজায় মরিবার তরে,,,, ব্যকরণগত ভুল তার কাজে কিংবা ব‌ই তৈরীর ব্যাপারে,,,, সেটা তো আমি নামজাদা লেখক একদম মেনে নেবো না সে যত‌ই তুমি বলো ভুল নয়,,,,

কিন্তু উল্টে এসবের বড় বড় বাবুয়ানী জমিদারী ঔদ্ধত্য এ তালপুকুরে তো তার আদৌ ঘটি ডোবে না ভাত ভাতার সেই সোহাগী বৌ এর স্বামী যে দিয়েছিল একদিন তার সিঁথির শিথানে কুসুমডিঙায় সিঁদুর সব জানে তবুও সময়ের অপেক্ষায় কুটো টি নাড়ে না চুপ করে বসে থাকে আর বলে ধৈর্য ধর একদিন সকলে তোকে বুঝবে,,,,,
একটা বিনয়ী ভাব সে ধরে রাখতে অপারগ হয় যে আমার ভুল হয়েছে আপনাকে এইভাবে মুখের উপর বলা উচিত হয়নি,,,, উল্টে কোন অনুশোচনা বোধ তার নেই সে তার দেখানো স্বত্তায় এতোটাই আগ্রহী যে তার ব‌ই অটোগ্রাফ করে দিয়ে দেয় সেই সম্পাদক কে যাতে তার ব‌ইয়ের অগ্রিম প্রচার হয় তার‌ই হাতে যদি এই অকাল কুষ্মাণ্ড অধমের হাতে কম সে কম একটা কাজের কাজ হয়,,, আরিব্বাস আমি তো ধন্য হয়ে গেলাম,,, দাদা কোথায় আপনার চরণধূলি একটু পদযুগল যেটা অরণ্যানী শৃঙ্খলে বাঁধা এগিয়ে দিন দেখি,,, জীবন সার্থক হয় আর কী,,,, তারপর সেই সম্পাদকের কোন আক্ষেপ বা আকুতি তার কানে পৌঁছায় না,,,, সে সেই জায়গা তৎক্ষণাৎ ত্যাগ করে চলে যায়,,,,, মনে মনে বলে তুই হচ্ছিস লিঙ্গশম্বুক আড়ালে লাজলজ্জা ছেড়ে আসা ঔদ্ধত্য এ থাকা শ্যেনদৃষ্টির চিল এখনি যদি ঝপাৎ করে ইচ্ছেডানায় এসে ঘাড়ে বসে আমার প্রতিষ্ঠিত মুন্ডু উখরে খাস তখন তার থেকে বাবা তুই যে জঘন্য ও নিম্ন শূদ্র জাত তোকে স্পর্শে যাবে এই পান্ডিত্যের খোলসে রাঘব বোয়াল তোকে অজ্ঞানতার অন্ধকারের অজ্ঞাতবাসে শোচনীয় দীর্ঘশ্বাসে ভোগানোই ভালো,,,, তাই হয়ে যাক এই মাহেন্দ্রক্ষণ এ আমার শীতঘুমের প্রস্থান,,,, করতে চাই না কোন উচ্চবাচ্য তার থেকে দূর থেকে হয়ে যাই নীরব দর্শক এখন চুপ করে থাকাই ভালো ঝামেলায় না জড়িয়ে,,, যত‌ই হোক আমি এখন নিজেই নিজে আত্ম‌অহংবোধের সমাধিতে লীন বোধিসত্ত্ব,,,,,

সম্পাদক মনে মনে ভাবে এই বিদ্যার অঙ্গ ব‌ইটা যেটা সেই লেখক তাকে অটোগ্রাফ করে উপহার দিয়েছে মৌখিক অনুরাগে ভাঙা ইটের ঝালাই পর্ব সেরে তাকে সঙ্গে করে তার বাড়ি অবধি নিয়ে যাওয়া কী আদৌ উচিত হবে,,,,
গোটা রাস্তা ধরে ট্রেনে করে যতো সে নিজের বাড়ির দিকে এগিয়ে আসতে থাকে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ও আক্রোশের যন্ত্রণার ধোঁয়া উড়াতে থেকে তত এক প্রগাঢ় আত্মগ্লানি তার বুকটা চেপে ধরে ভাবে এই ব‌ইয়ের ভার সে আর নিতে পারছে না,,,, এর থেকে এর শাপমোচন হয়ে যাওয়াই ভালো,,,,,
যে লেখকের মনুষ্যত্ব ও মনন বলে কিছুই নেই সারৎসার জ্ঞান তার অন্তঃসারশূন্য তা তাকে এই রাস্তাতেই ত্যাগ করে দেওয়াই ভালো হবে ,,,, সবথেকে বেশী উচিত হবে কারণ ভগবত গীতায় বলা আছে ঐ কর্মযজ্ঞের পথে চলতে থেকে কোন কোন সময় কর্ম ফলের চেয়ে আগে বেশী অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হয়ে দাঁড়ায় তাই তাকে সেই আগেভাগেই গ্রহণ করে নেওয়াই ভালো,,,, 
তাতেই সেই চাপ খানিকটা কমবে,,, 
পাপস্খলন হবে,,,,
যেমন ভাবা তেমনি তার কাজ,,,,
নামজাদা প্রতিষ্ঠিত লেখক দিয়েছিল সম্পাদক কে তার প্রীতির উপহার মহার্ঘ মূল্যের প্রতিভার কথকতা কাব্যমাধুর্য ঢেলে উপরিপর কোন কাব্যগ্রন্থের মোড়কে অটোগ্রাফ এর শিলান্যাসে প্রখর ব্যক্তিত্ব বুঝিয়ে দিয়ে যে তার পৌষমাস অন্যদিকে এইসব পাগলামি উচ্ছন্নে বিলাসী স্বাধীনতার ঘোরে সম্পাদকের মতিভ্রমে ঘটিয়ে দেয় কোন সর্বনাশ,,,,
ঐ যে কথায় আছে না কারোর পৌষ মাস আর কারোর সর্বনাশ,,,,  সেটাই হবে,,,,,
সম্পাদক চলতি ট্রেনের জানলার ধারে বসে ছিল আর চলন্ত উঠাপড়া রেললাইনের পাতগুলি লক্ষ্য করছিল কী অপার গতি উচ্ছ্বলতায় মুক্তির শ্বাস নেই কোন রুদ্ধশ্বাসে রুধিবারে রুদ্রাক্ষের নাম ইচ্ছে না থাকলেও দেখানো ভক্তির আড়ম্বর জপ, গুরু গুরু,,,,শব্দব্রহ্ম এবার তবে ঐ লেখকের চাপ তোমাকেই গ্রহণ নিপাত যাক নিপাত যাক,,,, ভাবলো এই জঞ্জাল কে আমি ত্যাগ করতে চাই,,,, মা সরস্বতী তুমি আমার অপরাধ নিও না,,,,বলেই সে সমগ্র ব‌ইটা কুটি কুটি করে ছিঁড়ে ফেলে ছুঁড়ে দেয় জানালা দিয়ে দূরে ঐ আস্তাকুঁড়ে,,,,,আর সেই ছিন্নপত্র গুলো উড়ে যায় মুক্তির নিঃশ্বাস ফেলে সম্পাদকের কাছে,,,,
মনে মনে ভাবে মনুষ্যত্ব ছাড়া জ্ঞান একপ্রকার দুর্বোধ্য বোঝা যা শুধু অন্তরের চাপ বাড়ায়,,,,,
তার থেকে সেই অজ্ঞাতবাস থেকে আজ আমার ছুটি,,,,,

"মেঘের মৈথুন প্রমোদ ঘেরে এক ছটাক সূর্য যেন আজ উঠেছে আবার বছর ঘুরে কালাশৌচে ক্লান্ত উপোসি জঠরে আরণ্যক ক্ষুধায় বিছের জ্বালা উঠেছে,,,,
তবুও আজ আমাদের ছুটি ও ভাই আজ আমাদের ছুটি",,,,,

Comments

Popular posts from this blog

অপরাজিত -৯

অপরাজিত ১০

অপরাজিত ৮