কবিতার কচিপাতা
যদি প্রেম না দিলে
হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়
এবার জন্মদিনে তোমাকে রেখে আসব বিনোদিনীর কাছে
সেখানে কিছুটা শুশ্রূষা পেলে তুমি ফের
ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে পারবে
অকস্মাৎ স্মৃতির অতল থেকে
যদি উঠে আসে সোনাঝুরির হাট
খোয়াইয়ের বন,জ্যোৎস্নারাতে কোপাইয়ের
মোক্ষলাভের আশায় ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে
বয়ে যাওয়া শূন্যে ডুবছে
ভূমন্ডল তখন...
নিরুদ্দেশ যাত্রায় কী যে কৌতূহল বারবার মনে পড়বে ঘরে বাইরে চিত্রা চৈতালি মানসী খেয়া
আহা সোনার তরীতে চেপে
কীভাবে যে ঢেউয়ের পর ঢেউ ভাঙছে পাড় অন্ধকারে......
আমাকে স্ফুলিঙ্গ দাও,আমি দেবো উন্মুক্ত বিমলা,এবার পচিশে বৈশাখে তোমার জন্মদিনে
ভেবেছি, তোমাকে নিয়ে একটা
এগজিবিশান করব
সুচরিতা ব্যাক স্টেজে গান গাইবে
মোমবাতির টিমটিমে আলোয়
শুধু করোনা সুন্দরী থাকবে পটের বিবীটি সেজে
তখন কেবল একটাই সান্ত্বনা
একটা জম্পেশ কান্ড ঘটবে
প্রেম কে সরাসরি প্রেম বলতে কারো
সাহস হবে না.....
ইচ্ছে ঘুড়ি
তীর্থঙ্কর সুমিত
সেই ঝড়টা এখনও আছে
তফাৎ শুধু মেঘগুলোর ...
আগের মত আর বৃষ্টি নামে না
যদিও বা বৃষ্টি নামে,
কিন্তু,সেখানে সৃষ্টির কোনো রসদ থাকেনা
এভাবেই কেটে যায় দিন
ক্রমশ বিন্দুর লড়াই
কে কাকে ছুঁলো এই নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নেই
তবুও একটা আলোড়ন
যেখানে সব সাদা কালো হয়ে যায়
আর বৃষ্টি নামায়
যেখানে মেঘের দরকারই নেই
সেখানেও মেঘ করে
আর প্রবল ঝড়
##
এভাবেই উরে যায় কত ইচ্ছা ঘুড়ি
##
ভো কাট্টা শব্দ করতে করতে।
পরিণতি
                 নিরুপম পাল
বিধ্বংসী আমফান ভেঙে দিলো
 সেই সুপারি গাছটা, 
 যার শরীরে লেখা ছিল
 ভালবাসার দুটি নাম 
সমর আর পূর্ণিমা।
 কপালের লিখন কে খন্ডাবে!
 প্রেমিকযুগল এক হতে পারেনি; 
 সমর এখন
দুই মেয়ের বাবা,
আর পূর্ণিমা
 দুই ছেলের মা। 
সমরকে ধরেছে ব্লাড ক্যান্সার
 লড়ছে লড়াই মৃত্যুর সঙ্গে।
 আর পূর্ণিমাকে গ্রাস করছে দারিদ্রতা
 লড়ছে লড়াই অভাবের সঙ্গে।
 বছর পনেরো আগেও যে গাছটা  
মিলিয়ে দিতো দুটো হাত, 
 ভালোবাসার সাক্ষী হতে যে
 নিরবে সহ্য করেছিল 
শরীর জুড়ে ক্ষত,
 প্রেমিক যুগলের শরীরী উত্তাপ...
 গাছটি এখন পুড়ছে পূর্ণিমার উনানে
অজান্তেই পরিণতির আগুনে।
 ভালোবাসার শেষ স্মৃতিটুকু
 কেড়ে নিল প্রকৃতির দূত
 বিধ্বংসী আমফান।
গাজী বাবার শিষ্যা
অমিত পাটোয়ারী
বাড়ি যখন বনে ছিল , চোখ মেরেছি তাকে
আমার দু’চোখ খুবলে নিয়ে আমায় দেখায় মা’কে
মা ছিল তার গাজী বাবার শিষ্যা
টুপি খুলে প্রণাম ক’রি ঠাকুরবাড়ির গঙ্গায়
জলের নীচে কালিয়া নাগের বউয়ের ভারী জঙ্ঘায়
বুঝে নিলাম একশো দিনের হিস্যা
হপ্তাটাকে লাল ক’রেছি। মাও-সে-তুঙের পুষ্পে
হিসি ক’রে দাঁড়িয়ে থাকেন ঘুম ভাঙা চোখ রুজ়ভেল্ট
কুক্কুরী সব পাথর হজম করছে
এই মুহূর্তে দেশের সকল প্রস্রাবাগার বন্ধ
যেহেতু তার হাতেই দু’চোখ , আমার শরীর অন্ধ
চোখের সামনে পোষা হরিণ ম’রছে
হিসেব মতো টেম্পো নেয়া , বনের ভেতর চুল্লি
পার্থ যখন কাঁধের ওপর হরিণটাকে তুললি
গাজীবাবা এলেন শিষ্যা নিয়ে
বনের ভেতর তুলতে গেলাম কাঁটা দিয়ে কাঁটা
নিজের চোখের গন্ধ পেয়ে শিউরে ওঠে গা’টা
মায়ের চোখে ছুঁড়ি তীর শানিয়ে
এবার আমরা ট্রেনে উঠে , বাসে উঠে কেষ্ট
সূর্য ডোবার পালা আসুক , আসুক যদি বেশ তো...
সে থাকবে দু’চোখ নিয়ে কাব্যে
বনের ভেতর নিশ্চয়ই কেউ আবার চোখ মারবে
সেও কোনো সুযোগ পেলেই খামচে তুলে ছাড়বে
তোলার আগে দু’বার ক’রে ভাববে ।
মৃগনয়না 
 মধুমিতা দাশগুপ্ত
বিশাল রাজপ্রাসাদে
           রাজা একা দাঁড়িয়ে।
কিশোরীর পদ্মহাত
            রাজার চোখে অবাক দৃষ্টি।
   চোখই জানে চোখের মায়া।
             কিশোরীর চোখের জল                         শুষে নেয় বলিষ্ঠ ঠোঁট।
               শ্রাবণের মেঘচুল ঢেকে দেয়
    রাজার কপাল ভীষণ আবেগে।
                 চোখের পরে, চোখ
অশ্রুপাত আজ বড়ো প্রিয়।
           সারারাত চলে শব্দ ভাঙার খেলা।
কিশোরী চলে যায় বনের গোপনে।
           পরদিন পূজায় বসে
রাজা দেখেন প্রতিমার 
              মুখের আদলে কিশোরীর মুখ
রাজার কন্ঠে পরম মন্ত্র উচ্চারিত হয়।                          ভালোবাসি-ভালোবাসি
                      স্বর্গ সুখ চাইনা।
                   বনের হরিণীকে চাই।
                          --------------

Comments
Post a Comment